কোরানের একটি আয়াত দিয়ে শুরু করছি, নাস্তিক ভাইরা দম নিয়ে একটু পড়ুন।
......বিশ্বলোকের কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।(৪২:১১)
হযরত মুসা (আ), সৃষ্টিকর্তা দেখতে চেয়েছিলেন।তিনি অনেক ভাগ্যবান ছিলেন যে বেশ কয়েকবার তিনি সৃষ্টিকর্তার সাথে কথা বলেছিলেন। হযরত মুসা (আ), সৃষ্টিকর্তার একজন প্রিয় ব্যক্তি হয়েও সৃষ্টিকর্তা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন তিনি( মুসা আ) সৃষ্টিকর্তাকে কখনো দেখতে পারবেন না
উপরের (৪২:১১) আয়াত স্পষ্ট ধারণা দেয় মহান সৃষ্টিকর্তার পবিত্র সত্তা আমাদের চিন্তা চেতনার ঊর্ধ্ব। তিনি এই মহাবিশ্বে অবস্থিত কোন কিছুর অনুরূপ নই এটাই হল তাকে দেখতে না পাওয়ার মূল কারণ।আধুনিক বিজ্ঞান দিয়ে এই জটিলতা কোনভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া যায়? ব্যাপার টুকু অনেকটা কষ্টকর, তবুও আমি চেষ্টা করেছি জটিলতা পরিহার করে সহজ পথ নিয়ে ব্যাখ্যা করতে।যারা বিজ্ঞান বুঝেন না তারাও একটু চেষ্টা করলে চমৎকার ভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন।
আমাদের এই জানা মহাবিশ্বে যা কিছু আছে,যা কিছু আমরা দেখি সব ত্রিমাত্রিক (3 dimensional space) । আমাদের গঠন, চিন্তা,চেতনা, কল্পনা, অনুভূতি, বোধগম্যতা সব এই ত্রিমাত্রিক স্পেস (3 dimensional space) ও একমাত্রিক সময়( 1 time) এর মধ্যে ঘুরপাক খাই(3 space + 1 time)।আমরা শত চেষ্টা করলেও এই ত্রিমাত্রিক স্পেস (3 dimensional space) ও একমাত্রিক সময়( 1 time) থেকে বের হতে পারবো না সেটি কল্পনায় হোক যাই হোক।
সর্বাধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের তত্ত্ব ( string theory) অনুযায়ী মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময় দশটি স্পেস-টাইম (space -time) ডাইমেনশন(dimension) ছিল।তার মধ্যে তিনটি ডাইমেনশন(dimension) এবং একটি টাইম মিলে আমাদের এই মহাবিশ্ব গঠিত যা আমরা দেখি,কল্পনা করি, এই সব কিছু তিনটি ডাইমেনশন(dimension) এবং একটি টাইমের মধ্যে। এখন প্রশ্ন উঠে আর ছয়টি গেল কই!!
string theory অনুযায়ী আর ছয়টি অকল্পনীয়ভাবে সংকুচিত অবস্থায় আছে(compact dimensions of space)
মহান সৃষ্টিকর্তা কমপক্ষে দশটি মাত্রা ব্যবহার করেছেন এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির জন্য।তাইতো এই মহাবিশ্বের গঠন ও সৃষ্টির সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্ত ঘটনা বর্ণনার জন্য আমাদের অন্তত দশটি মাত্র দরকার। কিন্তু আমরা তিনটি মাত্রার মধ্যে সীমিত। এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল কোন ব্যক্তি আমাদের এই তিনটি মাত্রায় না থেকে অন্য ছয়টি মাত্রার যেকোন একটি বা একাধিক মাত্রায় থাকেন তাহলে আমরা তাকে দেখতে পারবো না এমনকি কোন যন্ত্র দিয়ে সম্ভব না। বর্তামানে আস্তিক বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস রাখে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের এই তিনটি ডাইমেনশন বা মাত্রার বাইরে থেকে আমাদের নিকটে আছে তাই আমরা তাকে দেখতে পারিনা কিন্তু তিনি আমাদের দেখতে পারেন।
এখন একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয় টি আরো সহজ করে দিচ্ছি। একটি জগত কল্পনা করুন যেখানে শুধু দুটি মাত্র বা ডাইমেনশন এবং একটি সময় বা টাইম আছে অর্থাৎ উক্ত জগতে যা কিছু আছে তা হল (x,y,z=0,t)
এখন ধরুন জগতটিতে দুজন কাল্পনিক মানব ও মানবী আছেন যারা হল মি M এবং মিসেস N.। মি M, মিসেস N কে দেখলে মি M. এর কাছে মনে হবে মিসেস N একটি সরলরেখার অংশবিশেষ। কারণ তাদের ডাইমেনশন দুই মাত্রিক (x,y,z=0)।যদি মি M মিসেস N কে পুরাপুরি দেখতে চাই তার চতুরদিকে ঘুরে ঘুরে দেখতে হবে। কিন্তু ত্রিমাত্রিক আপনি কিংবা আমি(x,y,z) একই সময়ে মিসেস N কে পুরাপুরি দেখতে পারব।
আবার ধরুন মিসেস N ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করর ঘুমাচ্ছে। কিন্তু মি M তাকে দেখতে চাইলেও পারবেনা যেহেতু দরজা জানালা সব বন্ধ।অথচ আপনি কিংবা আমি (x,y,z) দেখতে পারব যদিও মিসেস N দরজা জানালা বন্ধ করর ঘুমাচ্ছে।
সুতরাং স্পষ্টত দুইমাত্রিক( 2 dimensions) জগতের কেউ আমাদের থেকে কিছু লুকাতে পারবেনা।
অনুরূপভাবে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের অতি নিকটে অবস্থান করে যদি চতুর্থ কিংবা তার বেশি মাত্রা (dimensions) এ থেকে আমাদের।দেখতে থাকেন কিন্তু আমরা তাকে দেখিনা।
আমরা ঘরের যত দরজা, জানালা লাগাই কিংবা পানি বা মাটির যতই গভীরে যাই না কেন আমরা ত্রিমাত্রিক (x,y,z) স্পেসকে ছাড়িয়ে যেতে পারব না ফলে আল্লাহ্ আমাদের এসব অবস্থায় দেখতে পান
দৃষ্টিসমূহ তাঁকে প্রতক্ষ করে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে আয়ত্ত করেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শী, সুবিজ্ঞ।(৬:১০৩)
লিখাটা pdf. ডাউনলোড করুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন