সোমবার, ১৪ জুন, ২০১০

প্রশাসনিক শিা কার্যক্রমে মোবাইল ফোন

সভ্যতার গতি প্রকৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবর্তিত হচ্ছে মানুষের কাজের ধারা ও কর্ম পদ্ধতি। বর্তমান বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে সভ্যতার গতি প্রকৃতি। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল। উন্নয়নশীল দেশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক কিংবা উন্নয়ন মূলক প্রতিটি কাজের েেত্র দূনর্ীতির একটি সুযোগ থেকে যায়। দূনর্ীতি নিমর্ূল করে রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বচ্ছতা আনয়নে তথ্য প্রযুক্তি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। আমরা বাস্তবতার দিকে ল্য করলে দেখতে পাই, সঠিক তথ্য না জানার কারনে অনেকে নানান ভাবে প্রতারিত হয়ে থাকে। তথ্যকে পুজিঁ করে অনেকে ভিন্ন ধরনের সুবিধা অর্জন করে থাকেন। সঠিক তথ্যকে যদি মানুষের নিকট সহজে পেঁৗছে দেওয়া যায় তবে অবৈধ সুবিধা ভোগীদের সুবিধা অর্জন অনেকাংশে হ্রাস পাবে। তথ্য আদান প্রদানের েেত্র মোবাইল ফোন বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার। এই মোবাইল ফোনকে ব্যবহার করে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করা যায়। আগে যেখানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বিদু্যৎ বিল জমা দিতে হতো, তা বর্তমানে ঘরে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাচ্ছে। ব্যাংক, বীমার েেত্রও মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। প্রযুক্তির এই ব্যবহার মানুষের সময় বাঁচানোর সাথে সাথে মানুষের দূর্ভোগ অনেকাংশে হ্রাস করেছে। আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে তথ্য আদান প্রদানে মোবাইল ফোন গুরম্নত্বপূর্ন কাজ করছে। সরকারি অফিস আদালতের বিভিন্ন কাজকর্মের তথ্য আদান প্রদানে এবং পাবলিক সেক্টরে তথ্য তুলে ধরার জন্য এই মোবাইল ফোনকে ব্যাপক ভিত্তিক হারে ব্যবহার করা যায়। মোবাইল ফোন নামক ছোট্র এই যন্ত্রটির রয়েছে বহুমাত্রিক ব্যবহার। এসব ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট, এফ এম রেডিও, বস্নু টুথ, এম পি থ্রি, ক্যামেরা, এস এম এস, এম এম এস সার্ভিস সহ অনেক ধরনের সুবিধা। আর কথা বলা ও কথা শুনাতো রয়েছেই। এই ছোট্র যন্ত্রটি দ্বারা আমরা আমাদের প্রশাসনিক অনেক কাজ কর্মে অনেক সিদ্ধানত্ম দ্রম্নত গ্রহন করতে পারি। জনগনের সামনে বিভিন্ন তথ্য কিংবা খবর পেঁৗছে দিতে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দূনর্ীতি দূর করা সহ মানুষের অনেক কল্যাণ সাধন করতে পারি। সরকারি বিভিন্ন সিদ্ধানত্মকে তাৎণিকভাবে মানুষের নিকট পেঁৗছে দেওয়ার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যায়। বিগত দিনে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে নেওয়া ও পিছনে নেওয়ার মত সিদ্ধানত্ম আমরা মোবাইল ফোনের এস এম এসের মাধ্যমে সকলেই জানতে পারি। কিংবা পোলিও টিকা খাওয়ানোর দিনণও মোবাইলের এস এম এসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তেমনিভাবে সরকারের অথর্াৎ মন্ত্রী সভার বৈঠকের গুরম্নত্বপূর্ণ সিদ্ধানত্মগুলো যেগুলো জনগনকে দ্রম্নত জানানো প্রয়োজন বা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জানানো প্রয়োজন তা এস এম এসের মাধ্যমে জানানোর ব্যবস্থা থাকলে জনগন সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হবে এবং উপকৃত হবে। তাছাড়া জনগণ সঠিক তথটি জানতে পারবে। যেমন গত কয়দিন পূর্বে ঘোষনা দেওয়া হয়েছে যে এখন থেকে কৃষকেরা মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে। এই ছোট্র তথ্যটি একটি এস এম এসের মাধ্যমে সবাইকে সহজে জানিয়ে দেওয়া যায়। কেননা বর্তমানে প্রায় সকলের ঘরে মোবাইল ফোন রয়েছে। যদি কোন কৃষক ঐ এস এম এস পড়তে নাও জানে তবে সে কারো মাধ্যমে পড়িয়ে জেনে নিতে পারবে। তাছাড়া মোবাইল ফোনের এস এম এসের মাধ্যমে লোডশেডিং এর সময় জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণে জনগণ উপকৃত হতে পারে। মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কার্যক্রমে মোবাইল ফোন ব্যবহার আরও সমপ্রসারণ করা গেলে জনগণ আরও বেশি উপকৃত হবে। সরকারের বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ স্থাপনে এটি বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে। সেবার মান বৃদ্ধি ও জনগণের স্বার্থে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা গেলে দূনর্ীতিও অনেকাংশে হ্রাস পাবে। তথ্যকে পুঁজি করে ব্যবসা কিংবা ধান্ধাবাজি রোধ হবে। তবে একথা সত্য যে মোবাইল ফোনের অপব্যবহারও এদেশে যথেষ্ট পরিমানে হয়েছে এবং হচ্ছে। তাই বলে এর বহুবিধ ব্যবহার রোধ করলে চলবে না। বরং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদানে জনগনকে সেবা দানের ল্যে মোবাইল ব্যবহার করা যেতে পারে। উন্নয়নশীল দেশে জনগনের দোরগোড়ায় যেকোন সংবাদ বা তথ্য পেঁৗছে দিতে বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে মোবাইল ফোন।
বর্তমানে মোবাইল ফোনে শিা কার্যক্রমও চালু হয়েছে। ইংরেজী শেখার জন্য বিবিসি জানালা নামে সার্ভিস চালু রয়েছে। শুধুমাত্র ইংরেজী কেন প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন েেত্রও এর ব্যবহার করা যায়। স্কুল কলেজের অধিকাংশ শিাথর্ীর হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে। আমরা এই মোবাইল ফোন গুলোকে শিা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে শিাথর্ীদেরকে উদ্ভূদ্ধ করতে পারি। তখন তারা এফ এম রেডিও শুনার পাশাপাশি শিা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হবে। শিা শুধু পড়ার টেবিল আর শ্রেণীক েসীমাবদ্ধ থাকবে না। তার বিসত্মার সর্বত্রই থাকবে। শিাথর্ী পড়তে বসে কোন পড়া বুঝতে না পারলে সে যেন হাতের মুঠোফোনের মাধ্যমে তাৎণিকভাবে জানতে পারে সে ব্যবস্থা চালু থাকলে শিাথর্ীরা উপকৃত হবে। কোন শিাথর্ী একটি ইংরেজী শব্দের অর্থ তার ডিকশেনারিতে খুঁজে না পেলে তা জানার জন্য সে যদি মোবাইল ফোন সার্ভিসের সহায়তায় জানতে পারে তবে তার জ্ঞানার্জনটা সাথে সাথে হবে। আর এ ব্যবস্থা না থাকলে হয়রানির সাথে সাথে তার সময়ের অপচয় হবে। তাই শিা বিস্তারে েেত্র আমরা এই মোবাইল ফোনকে আরও বেশি করে ব্যবহার করতে পারি। এেেত্র আমাদের এফ এম রেডিও গুলো গুরম্নত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে। মানুষ রেডিও শোনা প্রায় ভুলতেই শিখেছিল। বর্তমানে এফ এম রেডিওর কল্যানে আবার নূতন জাগরন সৃষ্টি হয়েছে। অনেক শিাথর্ী এফ এম শোনার সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং এফ এম রেডিওতে শিামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেশি করে প্রচার করা যেতে পারে। এতে শিাথর্ীরা অনেক কিছু শিখতে পারবে। পাশাপাশি মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলো শিামূলক বিভিন্ন সার্ভিস শিাথর্ীদের কল্যানে চালু করতে পারে।
তছলিম উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন