টেকচাঁদ ঠাকুর ওরফে প্যারীচাঁদ মিত্র ১৮১৪ সালের ২২ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মায়ের নাম জানা যায় না, বাবার নাম ছিলো রামনারায়ণ মিত্র। তখনো ভারতের রাষ্ট্রভাষা ফার্সি। সম্ভবতঃ সে কারণে মুনশী’র নিকট তাঁকে ফার্সি শিখানো হয়। বাংলা তাঁর পারিবারিক ভাষা ছিলো, আর বাংলার পঠন-লিখন জ্ঞান লাভ করেন পণ্ডিতের কাছে। এছাড়া বেথুন স্কুল ও হিন্দু কলেজে ইংরেজি ভাষা শেখেন। কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান হিসেবে ১৮৩৬ সালে প্যারীচাঁদ মিত্রের কর্মজীবন শুরু হয়।
পাবলিক লাইব্রেরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্যারীচাঁদ একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি কয়েকটি বিনিয়োগ কোম্পানির অংশীদার ও পরিচালক ছিলেন। সেগুলোর মধ্যে ছিল গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল কোম্পানি লিমিটেড, পোর্ট ক্যানিং গ্রান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি এবং হাওড়া ডকিং কোম্পানি। তিনি কয়েকটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। জ্ঞানোপার্জিকা সভা (১৮৩০), বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি (১৮৪৩), ডেভিড হেয়ার মেমোরিয়াল সোসাইটি (১৮৪৪), রেস ক্লাব (১৮৪৭), এগ্রিকালচারাল এন্ড হর্টিকালচারাল সোসাইটি (১৮৪৭), বেথুন সোসাইটি (১৮৫১) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও প্যারীচাঁদ মিত্র বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সম্মানসূচক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। যেমন : জাস্টিস অব পিস (১৮৬৩), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো (১৮৬৪), জেল ও কিশোর অপরাধীদের সংশোধন কেন্দ্রের পরিদর্শক (১৮৬৪), কলকাতা হাইকোর্টের গ্রান্ড জুরি (১৮৬৮-১৮৭০), বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য (১৮৬৮-১৮৭০), কলকাতা মিউনিসিপ্যাল বোর্ডের অবৈতনিক ম্যাজিস্ট্রেট প্রভৃতি।
বাংলা ভাষায় দ্বিতীয় উপন্যাস ‘আলালের ঘরের দুলাল’ (১৮৫৭) প্যারীচাঁদ মিত্রের রচনা। উপন্যাসটি ইংরেজিতেও অনুবাদ করা হয়েছিলো ‘The spoiled child’ নামে। এছাড়াও লিখেছেন ‘রামারঞ্জিকা’ (১৮৬০), ‘কৃষিপাঠ’ (১৮৬১), ‘ডেভিড হেয়ারের জীবনচরিত’ (১৮৭৮) এবং ‘বামাতোষিণী’ (১৮৮১)। ‘মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়’ ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়–যেখানে লেখকের নাম হিসেবে পাওয়া যায় টেকচাঁদ ঠাকুর। উনিশ শতকের কলকাতার শিক্ষিত বাঙালিদের, বিশেষত পুরুষদের জীবনযাপন নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক রচনা ‘মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়’।
১৮৫৭ সালে প্রকাশিত উপন্যাস ‘আলালের ঘরের দুলাল’-এ ‘মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়’-এর বিজ্ঞাপন।
ইবুকটি ডাউনলোডের জন্য এখানে ক্লিক করুন!
পিডিএফ ফাইল, ৬৫০কিলোবাইট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন