সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫

দুইডা টেকা দিবেন? খিদা লাগছে, কিছু খামু!

Survival of the fittest.
চার্লস ডারউ্ইনের এই অবিস্মরণীয় থিওরী অনুযায়ী প্রাণী জগতের survive বড়ই আশ্চর্যময়।

একটি তিমি মাছ নাকি প্রতিদিন ২৫টন খাবার সংগ্রহ করে ও তা খেয়ে বেঁচে থাকে। পক্ষান্তরে একটি মানুষের প্রতিদিন মাত্র কয়েকশ গ্রাম খাদ্য প্রয়োজন। অথচ পৃথিবীর বহু মানুষ সেই খাবার পায় না!সারা পৃথিবীর ক্যাপিটালিস্টরা যে পরিমাণ খাবার অবহেলায় নষ্ট করে, তার ১০০ ভাগের মাত্র ২৫ ভাগও যদি বাঁচানো যায়, তবে এই পৃথিবীর একটি মানুষও অভুক্ত থাকবে না।

চট্রগ্রাম থাকা কালিন খোদ নিজের মেস ও অনেক বন্ধুদের মেসে গিয়ে দেখেছি মাসের শেষদিকে কোনো কোনো রাত  চাল কিনার পয়সা থাকত না। ওয়াসার পানি ঢকঢক করে গিলে হাসিমুখে রাত কাবার করে দিত।

গণপরিবহণে চলতে গিয়ে টুকরো টুকরো অনেক গণজীবনের চিত্র দেখেছি।  ৩/৪ বছরের কচি বাচ্চা ছেলে-মেয়েগুলো আমার মতো অপদস্থ ও অপদার্থ ছেলের হাঁটুর কাছে পাত্র উঁচিয়ে বলে,
“দুইডা টেকা দিবেন? খিদা লাগছে, কিছু খামু!”

কার্ল মার্ক্স এর তত্ব, “জীবনধারণের জন্য মানুষের প্রয়োজন খাদ্য ও আশ্রয়। ধর্ম বা রাজনীতির কোনো ভূমিকা নেই এখানে।

আল ফালা গলি,২নং গেইট,চট্টগ্রাম । আমার বাসা থেকে খুব কাছে ওই বস্তির মানুষগুলোকে দেখেছি অবাক বিস্ময়ে। ওখানকার বাবা-মা তাদের সন্তানদের কাছ থেকে আধুনিক পিশাচ সভ্যতার প্রতিভা দেখতে চায় না। ওরা চায়, ওদের সন্তান দু’টা পয়সা কুড়িয়ে আনুক লোকের করুণায় আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়ে!

সমাজের অবহেলিতদের খাদ্যের ব্যপারটা বর্তমানে পুরোই Give and Take পলিসির উপরে আছে। অগাধ টাকা-পয়সা হলে মাজার, মসিজিদ, মন্দির, গির্জা আর প্যাগোডায় উজাড় করে ঢালা হয় ধর্মের প্রহরীদের খাইয়ে দিয়ে ঈশ্বরের তুষ্টি অর্জনের জন্য। গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের একটা ছবি দেখেছিলাম, দু’জন লোকের কোমড় পর্যন্ত উঁচু টাকার স্তূপ।
  কাদের জন্য? ক্ষুধার্তদের জন্য?

এতক্ষণ যা বললাম সব মিথ্যা। আসল ঘটনা শুনবেন?
পৃথিবীতে কোনো ক্ষুধা নেই। শুধু জন্মদিন, বার-বি-কিউ পার্টি, ফেস্টিভ্যাল আছে।
সজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, মাজার, দেব-দেবী প্রমুখ সম্মানিতদের পদতলে হৃদয় উজাড় করে পয়সা-কড়ি দিয়ে আসতে হয় । মানুষের কোনো ক্ষুধাবোধ আছে নাকি? এসব রূপকথা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন