শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৬

কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের চেতনা তে


আজ ১২ই ভাদ্র / প্রেমের দ্রোহের সাম্যের মানবতার কবি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলাদেশের জাতীয় কবি প্রেম ও দ্রোহের কবির প্রয়াণ দিবস আজ সে কথা ও মনে হয় আমরা অধিকাংশ ই ভুলে গেছি।

একজন মানুষ হিসেবে নজরুল জন্মালেন ,এবং মারা ও গেলেন ।কিন্তু জন্ম মৃত্যুর মাঝে নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে আমাদের মাঝে অমর হয়ে রইলেন
"সেইজন্য একজন কাজী নজরুল ইসলাম একজন কাজী নজরুল ইসলাম ই । "

মানবতার কবি , মানুষের কবি তার সাহিত্যর বজ্র বিদ্যুৎ নিয়ে উড়ে বাংলা সাহিত্যের আকাশ জুড়ে বসলেন । কবির সৃজনশীল জীবনের সময়সীমা স্বল্পকালীন হলেও অনেক বেশি বিচিত্র। সাম্যের কবি , মানবতার , প্রেমের ,দ্রোহের বিদ্রোহের কবি তিনি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ।

বাংলার ,বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদী একজন মানুষের মানবিক সত্ত্বা কেমন হতে পারে ,তা নজরুল আমাদের দেখিয়েছেন

বর্ধমান জেলার আসানসোল মুহকুমার তৎকালীন রাণীগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত চুরুলিয়া গ্রামের ঐতিহ্যমণ্ডিত কাজী পরিবারের ১৮৯৯- - - ২৪শে মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬) বুধবার কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন ।  

১৯০৮--- ২০শে মার্চ নজরুল এর পিতা কাজী ফকির আহমেদ এর মৃত্যু হলে কিশোর নজরুল এর আর্থিক অভাবে শিক্ষা জীবন বিঘ্নিত হয় - মসজিদের ইমামতি ,মাজারের খাদেমগিরি ইত্যাদি কাজে জীবিকা নির্বাহ করতেন কিশোর নজরুল

১৯২১--- আলী আকবর খান এর সংগে কুমিল্লায় আসেন এবং সৈয়দা খাতুন এর সাথে  ১৮ জুন (৩রা আষাঢ় ,১৩২৩) বিবাহ করেন । সৈয়দা খাতুনের নজরুল এর দেয়া নাম ছিল " নার্গিস " ।

১৩২৬ এর কার্তিক সংখ্যা ।" মোসলেম ভারত " এ একই সাথে । মার্চ এ প্রথম ক্যাব গ্রন্থ " ব্যাথার দান প্রকাশ করেন ।২৬ শে সেপ্টেম্বর " ধুমকেতু " তে কবির আনন্দময়ীর আগমনে এবং ১৩ অক্টবার ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী প্রকাশ করেন।২৫ অক্টবার অগ্নিবীণা প্রকাশিত হবার পর ৮ই নভেম্বর রাজদ্রোহের অপরাধে নজরুল এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারী করা হয় এবং ২৩শে নভেম্বার কুমিল্লা থেকে নজরুল গ্রেফতার হন।

১৯২৩--- ৭ই জানুয়ারী " রাজবন্দীর জবানবন্দী " রচনা করেন এবং ১৬ জানুয়ারী নজরুল এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, ২২ শে ফেব্রুয়ারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর গীতিনাট্য " বসন্ত" নজরুল এর নামে উৎসর্গিত করেন ।

এপ্রিলে রাজনৈতিক বন্দীদের উপর জুলুম এর প্রতিবাদ এ নজরুল ৩৯ দিন অনশন করেন এবং ডিসেম্বর এ নজরুল মুক্তিলাভ করেন।

১৯৭২---- স্বাধীন বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী রাস্ট গঠন এর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রাহমান ভারত সফরে কলকাতায় এসে ভারত সরকারের কাছে আবেদন রাখেন স্বাধীন বাংলাদেশে কবির জন্মদিন পালন করার,১৯৭৫--- কবিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের ডি-লিট উপাধি প্রদান করে এবং ১৯৭৬---- সালে জানুয়ারী মাসে কবিকে বাংলাদেশে সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন ।২১ ফেব্রুয়ারিতে ২১ শে পদকে ভূষিত করেন।  

১৯৭৬---২৪শে মে তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান এবং পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রাহমান কবি নজরুল কে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মি ক্রেস্ট উপহার দেন ,এবং নজরুল এর চল চল চল সঙ্গীত টিকে বাংলাদেশের রন সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ১৯৭৬---২৯শে আগস্ট সকাল ১০টা ১০ মিনিটে কবি পিজি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

নজরুল এর শারীরিক উপস্থিতি ছিল বাংলাভাষী দের কাছে প্রেরণার উৎস ,তার চলে যাওয়া দুই বাংলা শোকের সাগরে ভেসেছিল কেননা তিনি ছিলেন আমাদের চেতনা তে ছিলেন আমাদের প্রানের কবি ।তিনি দেখিয়ে দিয়ে গেছেন উত্তরন এর পথ যতই কঠিন হোক না কেন , চেস্টা , সাধনা আর প্রতিভায় জীবনের চরাই উৎরাই পেরিয়ে ঠিক আসাধারন হয়ে উঠা সম্ভব ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন