মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬

হুমায়ুন আহমেদ স্যার্ শুধু লেখক কিংবা নাট্যকারের চাইতেও বেশি কিছু ছিল

রাত ৮টা ৪৫ মিনিট । সারা বাংলাদেশ বাংলাদেশ টেলিভিশনের সামনে । শেষ পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি হয়ে যায় বাকের ভাই এর ।

সারা দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে ,’’হুমায়ূন আহমেদের চামড়া , তুলে নেব আমরা । ঘটনাটা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটক প্রচার সময় কালের ।নাটকের নায়ক বাকের ভাই । মহল্লার প্রভাবশালী ‘কুত্তাওয়ালী’ তার পরিচালিত প্রাইভেট ব্রথেল ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে অন্যায় ভাবে বাকের ভাইকে খুনের মামলায় ফাঁসীয়ে দেয় । বাকের ভাইএর এক চেলা বদি ভয় ভীতির কারণে রাজসাক্ষী হয়ে বাকের ভাইর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয় । দর্শক হতাশ , তারা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় বাকের ভাইর ফাঁসি হয়ে যাবে । এর পরেই ঘটতে থাকে উপরোক্ত ঘটনাগুলি ।
বাকের ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ায় রাস্তায় গণপিটুনির শিকার হন আব্দুল কাদের । অল্পের জন্য তিনি প্রাণে রক্ষা পান ।বহু দিন তাঁকে পুলিশ প্রোটেকশনে চলতে হয়েছে। শেষ পর্ব প্রচারের দিন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হুমায়ুন আহমেদের নিরপত্তা জোরদার করে । খারাপ কিছুর আশংক্ষায় তাঁকে গোপনে সরিয়ে নেয়া হয় অন্য বাসায় ।

এ নজীর পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল । কত বড় মাপের লেখক হলে একজন লেখক তাঁর সৃষ্ট চরিত্রের সাথে সারা দেশকে একাত্ম করে ফেলতে পারে ?

অনেকে বলে,বাংলাদেশের মানুষকে বই পড়তে শিখিয়েছেন হুমায়ুন। আমি বলব,শুধু বই পড়তেই না,এদেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন তিনি। শিখিয়েছেন কীভাবে জ্যোছনা দেখতে হয়। হাছন রাজার গানেও বর্তমান জনপ্রিয়তা এনে দেয়ার পিছনে তার হাত আছে। গল্প, গান, কবিতা, প্রকৃতি, স্বপ্ন ও রহস্যপ্রেমী হুমায়ুন আহমেদ তার প্রেমগুলোই শিখিয়েছেন পুরো জাতিকে তার মায়া ধরানো লেখনির মাধ্যমে। কোন এক মধ্যাহ্নে কোন চা এর স্টল অথবা ভাত-মাছের হোটেলে একলা বসে “হাওয়া মে উড়তা যায়ে” গানটিকে মিস করে কতজন মানুষ আমি জানি না। তবে এটা জানি, যারা মিস করে তাদের সেই অনুভূতির আড়ালের কারিগর হুমায়ূন আহমেদ স্যার।
 
২০১২ সালের জুলাইর ১৯ তারিখে কিংবদন্তী লেখক হুমায়ূন স্যার আমাদের ছেড়ে চলে যান। যেখানেই আছেন ভালো থাকবেন স্যার্।আমরা আপনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন