বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬

চলার পথের ভালোবাসা


ভালোবাসি রোদের মিষ্টি উষ্ণতার স্পর্শ টাকে
ভালোবাসি শান্ত অনুভুতির শীতল বাতাস টাকে ।

ভাবতে ভাবতে গাইতে ভালোবাসি,
ভালোবাসি এলোকেশে থাকতে।

একটু আগে বাথরুমে ছোট কাজ সারতে গিয়ে প্যান্টের চেইনটা নষ্ট হয়ে গেছে ইমরান এর (কাল্পনিক নাম)। । তারপর থেকেই অনেক অস্বস্তিতে আছে ইমরান। যতই শার্টটা টেনেটুনে সমান করে জায়গাটা ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে, ততই ট্রেনের হু হু বাতাসে শার্ট উড়ে গিয়ে প্যান্টের চেইনের খোলা জায়গাটা বের হয়ে আসছে।

চারপাশে অনেক মানুষ, বিশেষ করে মেয়ে অনেক। তাই লজ্জাটা বেশী লাগছে ইমরানের। তার ওপর বিপরীত দিকে বসে থাকা একটা মেয়ে বার বার ওর দিকে তাকাচ্ছে। বোধহয় ওর ব্যাপারটা টের পেয়ে গেছে। টের পেয়ে গেছে, ভালো কথা। কিন্তু বার বার এভাবে তাকিয়ে ওকে আরও বেশী লজ্জায় ফেলে দেওয়ার মানে কি?

ট্রেন কমলাপুর এসে দাড়িয়েছে। সবাই নামার জন্য হুড়াহুড়ি করছে। ইমরানও নামার জন্য সামনে এগিয়ে যায়। হঠাৎ ওর চোখ পড়ে মেয়েটার ওপর। বার বার তাকিয়ে দেখা মেয়েটি। ভিড়ের মধ্যে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সামনে এগুতে পারছে না। যে যার মত মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যাচ্ছে।

ইমরান এগিয়ে গিয়ে ওর শরীর দিয়ে মেয়েটাকে আড়াল করে দাঁড়ায়। মেয়েটার মুখে কৃতজ্ঞতার হাসি ফুটে ওঠে।
"কি ব্যাপার, আপনি এগুচ্ছেন না যে?"
- ভাই, আমার স্যান্ডেলটা ছিঁড়ে গেছে। ছেঁড়া স্যান্ডেল পরে ভিড়ের মধ্যে হাঁটতে পারছিলাম না।
"স্যান্ডেলগুলো খুলে হাতে নিন।"
- জী...!!!
"যেটা বলছি, করুন।"

মেয়েটি পা থেকে স্যান্ডেল জোড়া খুলে ফেললো।
"নিন, এগুলো আপাতত পরে ফেলুন।"
- আপনি কি পরবেন?
"আমার খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস আছে। দেরী করবেন না, এভাবে ধাক্কা খেতে থাকলে যে কোন মুহূর্তে আমি আপনার গায়ের উপর এসে পড়বো।"

মেয়েটি হেসে ফেলে।ইমরান অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। একটা মানুষের হাসি এত সুন্দর হতে পারে। কিভাবে সম্ভব?
পিছনের মানুষজন ইমরানকে ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ইমরানের তাতে কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। ও মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে তাকিয়ে মেয়েটিকে দেখছে।

মেয়েটি হেসেই যাচ্ছে, হেসেই যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও হাসি থামাতে পারছে না। ওর কি দোষ! পায়ের স্যান্ডেল খুলে দেবার সময় ইমরানের প্যান্টের চেইন নষ্ট হবার জায়গাটা দেখে ফেলার পর থেকে ও আর হাসি থামিয়ে রাখতেই পারছে না!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন