সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

কেমনে পারিস মা!

জীবনের তাগিদে প্রবাসে যায় ছেলে।পেছনে রেখে যায় ভালোবাসার মানুষকে। লম্বা দূরত্ব ভালোবাসার ঘন্ত্ব কমিয়ে দেয়। একদিন জানিয়ে দেয় প্রেমিকা
- লং ডিসট্যান্স রাখা সম্ভব না
ছেলে নিরুপায়। এদিকে দেশে রেখে যায় মা টাকেও। প্রতিদিন কাজের ফাকে লাঞ্চটা সেরে নেয়। রেডিমেড লাঞ্চ। মায়ের হাতের ভাত ডাল না। প্রবাসে বসে প্রবাসী খাওয়া খেতে খেতে ছেলের মনে পরে মায়ের হাতের আপন ভাত ডালের কথা
- কিরে ভর্তা টা নিলিনা। টাকি মাছের ভর্তা।
টপ টপ করে পানি ঝড়ে ছেলের চোখ থেকে। ভিজিয়ে দেয় রেডিমেড লাঞ্চ। এমন সময় দেশ থেকে মায়ের ফোন আসে
- তোর মন খারাপ কেন
- কই নাত মা
- কেন যেন মনে হল মন খারাপ
- তুমি খেয়েছ
- না
- এরকম লেট করার মানে হয়না মা
- তুই দেশে আয় মা ছেলে মিলে একসাথে খাব
এভাবেই প্রবাসী ছেলের প্রতিবেলার খাওয়া সিক্ত হয় মায়ের অভাবে চোখের পানিতে। এদিকে দেশে বসে মা অপেক্ষায় থাকে কখন ছেলে দেশে আসবে। ভালো ভালো খাবার রাধবে । 
.
কিন্তু মায়ের বয়স হয়। দুই হাতে পরিবার সামলান সেই শক্ত দু হাতের জোর কমে দুর্বল হয়ে যায়। তখন মা ঘুমায় হাসপাতালের বেডে ,ছেলে রাত জেগে বসে থাকে মায়ের সিথানের কাছে। কথা বলার শক্তি নেই মায়ের্। তবুও ফিস ফিস করে দুর্বল কন্ঠে মা ছেলেকে জিজ্ঞেস করে
- বাসায় বাজার আছেত?
- আছে
- বুয়া আসে?
- উফ তুমি চিন্তা কোরোনাত মা
- দুপুরে খেয়েছিস?
সময় শেষ হয়ে আসে মায়ের্। চরম মুহুর্তটা এসে যায়। ছেলেকে ছেড়ে মা পাড়ি দেয় পরকালের রাজ্যে। বোবা হয়ে ছেলে বসে থাকে মায়ের লাশের পাশে। মৃত্যুর আগে দুখিনী মায়ের ছেলেকে বলা শেষ কথা ছিল
- দুপুরে খেয়েছিস?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন