মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬

তেলে জল মেশানো জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ


বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব আজ জঙ্গিতংকে আতংকিত , সম্প্রতি গুলশান ট্র্যাজেডি আর
শোলাকিয়ায় হামলার পর সবার মুখেই এখন প্রশ্ন তবে কি পাকিস্থান বা মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোর মত বাংলাদেশ ও জঙ্গিবাদের আঁতুড় ঘরে পরিনত হয়েছে ?

যা হোক সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা গুলোর পর চেষ্টা করেছিলাম এ বিষয়ে কিছু জানবার আজকে তারই কিছু অংশ তুলে ধরবার চেষ্টা করলাম>>

আজকাল জঙ্গিবাদ আর মৌলবাদ শব্দ দুটি প্রায় একই অর্থেই শোনা যায় , আসলেই কি দুটি বিষয় এক ?

আসেন মৌলবাদ সম্পর্কে উইকিপিডিয়া কি বলছে শুনি,
মৌলবাদ (ইংরেজি: Fundamentalism) হচ্ছে গোঁড়া ধর্মীয় মতবাদসমূহের কঠোর অনুগমনের চাহিদা যা সাধারণত বোঝায় উদার ধর্মতত্ত্বের বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া। এই শব্দটি ইংরেজি ফান্ডামেন্টালিজম শব্দের অনুবাদ। মৌলবাদ শব্দটির সাধারণ অন্য অর্থ হল মূলজাত। এখানে মূল শব্দটি দ্বারা ধর্ম বোঝানো হচ্ছে। অর্থাৎ আদি কাল থেকেই ধারনাটি ধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে। আর সে ধর্ম হল খ্রিস্টধর্ম। তথ্যসুত্র ;উইকিপিডিয়া

মৌলবাদ সম্পর্কে বাংলাপিডিয়া বলছে,
মৌলবাদ উৎপত্তিগত দিক থেকে মৌলবাদ (Fundamentalism) একটি খ্রিস্টীয় শব্দ এবং বর্তমানে শব্দটি ইসলাম ধর্মসহ অন্যান্য ধর্মীয় চরমপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মৌলবাদ’ শব্দটির উৎপত্তি খ্রিস্টীয় ‘মৌলবাদী’ (Fundamentalists) শব্দ থেকে হয়েছে।মোরমন্স (Mormons), পেন্টিকোস্টালস (Pentecostals), ইভনজেলিক্যাল্স (Evangelicals) ইত্যাদি খ্রিস্টীয় নাম বা অভিধাগুলো এই অর্থে মৌলবাদী যে, তাঁরা বাইবেলের প্রতিটি শব্দকে সত্য ও পবিত্র মনে করে এবং এগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়। সকল পুরাতন ধর্মে সহজাতভাবেই মৌলবাদী ধারণা বিদ্যমান আছে। তথ্যসুত্র ; বাংলাপিডিয়া

আচ্ছা বুঝলাম মৌলবাদ কি, কিন্ত এর উৎপত্তি কিভাবে ?
বাংলাপিডিয়া বলছে –
উনিশ শতকের শেষের দিকে ও বিশ শতকের শুরুতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিস্টীয় মৌলবাদ লক্ষ্য করি। খ্রিস্ট মৌলবাদীরা প্রচন্ডভাবে আধুনিক নব্য প্রবর্তিত রীতি-নীতির বিরোধিতা করে, কারণ তারা মনে করে আধুনিকপন্থীরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে বাইবেলের বিশ্বস্ততা ও সঠিকতার ভিত্তি দুর্বল করেছে।
ইরানে ব্যাপক ইসলামি বিপ্লবের (১৯৭৮-৭৯) পর পশ্চিমা দেশসমূহ ইসলামি মৌলবাদী ধারণা আবিষ্কার করে। ইরানের এই ইসলামি বিপ্লব যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত রেজা শাহ পহলবিকে (১৯১৯-৮০) ক্ষমতাচ্যুত করে এবং তাঁর সকল আধুনিক সংস্কারের বিলোপসাধন করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, ইসলামের মূলনীতি ও বিদেশি প্রভাবমুক্ত ইসলামিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ইরানের বিপ্লব ছিলো ইরান থেকে আমেরিকার আধিপত্য উচ্ছেদ করা। আরো অবিশ্বাস্য বিষয় হচ্ছে, বলা হয় টুইন টাওয়ার ঘটনা (১১ সেপ্টেম্বর ২০০১) আল-কায়দা দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এ দুটি অজুহাতসন্ধানী ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামি পুনরুজ্জীবন সম্পর্কে বিস্তর লেখা-লেখি শুরু হয়, এবং এর ফলে পাশ্চাত্যে তথাকথিত ইসলামি মৌলবাদী ধারণা জন্মলাভ করে।


  

হলি আর্টিজান ক্যাফেতে সেদিন জাপানি নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছিল যারা জাইকার হয়ে এসেছিলেন মেট্রোরেলের কাজের জন্য । তর্কের খাতিরে আমি ধরেই নিলাম তাদের হত্যার বিশেষ কোন উদ্যেশ্য ছিল নাহ
কিন্তু এত টুকুই কি শেষ ?

তবে কথা হল হামলা পরবর্তী দেশের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি যথারীতি আগের মতই আছে । যেকোন ঘটনায় বিরোধী মত কে আক্রমন করে রুলিং পার্টি একদিকে আত্মতৃপ্তির ঢেকুড় তুলছে আর অন্য দিকে জঙ্গিবাদের জন্য ভূমি উর্বর হচ্ছে । তেলে জল মেশানোর মতই জঙ্গিবাদের মত অগ্রহনযোগ্য, মানবতা বিরোধী বিষয় কে রাজনীতির মত প্রগতিশীল , জনকল্যাণমূলক বিষয়ের সাথে মিশিয়ে করা হচ্ছে একাকার ।জঙ্গিবাদ কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সবাই নিজের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত ।

সবশেষে , অতি সম্প্রতি ফ্রান্সের নিসে জরুরী অবস্থার মধ্যেই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে , এবার হামলার কৌশল ও ছিল ভিন্ন । যা হোক বিশ্বজুড়ে এসব হামলা আর এর প্রেক্ষিতে ইসলাম কে সন্ত্রাসবাদের সংবিধান আখ্যা দেওয়া ,লাঠি না ভেঙ্গে সাপ কে মারার ই নামান্তর ।তাই জঙ্গিবাদ কে রুখতে কেবল দেশে নয় বরং বিশ্বব্যাপী ঔক্য গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন কারণ জঙ্গিবাদের কোন দেশ নেই , কোন ধর্ম নেই ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন